বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

ইংল্যান্ড

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১ এপ্রিল, ২০২১

ইংল্যান্ড এমন একটি দেশ, যা যুক্তরাজ্যের বৃহৎ অংশ হিসেবে পরিচিত। এর উত্তরে স্কটল্যান্ড, পশ্চিমে ওয়েলস, উত্তর-পশ্চিমে আইরিশ সাগর, দক্ষিণ-পশ্চিমে কেলটিক সাগর অবস্থিত। পূর্বে ইংল্যান্ডকে ইউরোপীয় মহাদেশ থেকে আলাদা করেছে উত্তর সাগর আর দক্ষিণে আলাদা করেছে ইংলিশ চ্যানেল। ইংল্যান্ড দেশটি ব্রিটেনের পাঁচ-অষ্টমাংশ জুড়ে রয়েছে।

বন্ধুরা, অনেকের মনেই এখন হয়তোবা প্রশ্ন উঠছে যে, ইংল্যান্ড যদি আলাদা দেশই হবে তাহলে যুক্তরাজ্য কী আর গ্রেট ব্রিটেনই বা কী? একদম সংক্ষেপে বলতে গেলে, যুক্তরাজ্য ৪টি সাংবিধানিক রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত একটি দেশ। এই ৪টি দেশের মধ্যে ইংল্যান্ড হচ্ছে একটি দেশ। আর গ্রেট ব্রিটেন হচ্ছে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের সর্ববৃহৎ দ্বীপ, যেই দ্বীপেরই একটি অংশ হচ্ছে ইংল্যান্ড।

তাহলে বন্ধুরা চলুন, ইংল্যান্ড সম্পর্কে আরো কিছু জানা-অজানা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

১। ইংল্যান্ড একসময় বিশ্বের প্রধান ও অগ্রগামী অর্থনৈতিক শক্তি ছিল। ১৮ শতকের শেষে ও ১৯ শতকের শুরুতে ইংল্যান্ডেই বিশ্বের প্রথম শিল্প বিপ্লব ঘটে। এর সূত্র ধরে এখানে এমন একটি সমাজ সৃষ্টি হয় যাতে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর প্রাধান্য ছিল বেশি। এটিই ছিল বিশ্বের প্রথম নগরায়িত রাষ্ট্র, যেখানে অর্ধেকেরও বেশি নাগরিক শহরে বাস করেন।

দ্রুত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের সুবাদে ১৯ শতকে রাণী ভিক্টোরিয়ার আমলে ব্রিটেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশে পরিণত হয়। শিল্প বিপ্লবের আগে ও পরে বহুকাল যাবত লন্ডন ছিল বিশ্বে পুঁজিবাদের মূল কেন্দ্র। দেশটি ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ।

২। ১ লাখ ৩০ হাজার ২৭৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটিতে প্রায় ৫ কোটি ৫৬ লাখ মানুষের বসবাস।

৩। ইংল্যান্ডের সরকারি ভাষা ইংরেজি এবং এটি তাদের মাতৃ ভাষা। ইংরেজি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের মুখের ভাষা। সারা পৃথিবীতে প্রায় ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ ইংরেজিতে কথা বলে থাকেন। যে সংখ্যাটা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে।

৪। দেশটির প্রধান ধর্ম হচ্ছে খ্রিস্টধর্ম। ইংল্যান্ডের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ খ্রিষ্টান। কোনো ধর্ম পালন করে না এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ। বাকিরা মুসলিম, হিন্দু সম্প্রদায়সহ নানা জাতীগোষ্ঠীর মানুষ।

৫। ইংল্যান্ডের রাজধানী এবং সমগ্র পৃথিবীরই অন্যতম বৃহত্তম শহর লন্ডন। এটি ইংল্যান্ডের টেমস নদীর তীরে অবস্থিত। প্রায় ৭০ লক্ষ লোকের বসতি এই লন্ডন সপ্তদশ শতক থেকেই ইউরোপে তাঁর প্রথম স্থান বজায় রেখে আসছে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে এটিই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর। কারণ তখন বিশ্বের উল্লেখযোগ্য সকল স্থানই ছিল ব্রিটিশ রাজত্বের অধীন আর লন্ডন ছিল সেই রাজত্বের রাজকীয় ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র। বর্তমান যুগেও লন্ডন পৃথিবীর অন্যতম প্রধান অর্থ-বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে।

৬। আপনি কি ভেবেছেন, লন্ডন ইংল্যান্ডের প্রথম রাজধানী? উত্তরটি হবে, না। ইংল্যান্ডের প্রথম অফিশিয়াল রাজধানী হচ্ছে উইনচেষ্টার। ১৫১৯ সালে শহরটিকে ইংল্যান্ডের রাজধানী হিসাবে মনোনীত করা হয়।

৭। ইংল্যান্ডে আপনি কখনোই সমুদ্র থেকে ১১৫ কিলোমিটারের বেশি দুরুত্তে থাকতে পারবেন না। আপনি দেশটির যেখানেই থাকুন না কেন। কারন দেশটিতে সমুদ্র থেকে সর্বচ্চ্য দূরত্ব ঐ ১১৫ কিলোমিটার।

৮। ইংল্যান্ডের লিডস শহর ইউরোপের অন্যতম বৃষ্টিভেজা শহর। শহরটিতে প্রতি বছর প্রায় ১০২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এই দেশের মানুষেরা কেন আবহাওয়া নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করে তা এখান থেকেই বোঝা যায়।

৯। ইংল্যান্ড একটি দ্বীপদেশ হতে পারে কিন্তু এটি মূল ইউরোপের সাথে একটি আণ্ডারওয়াটার টানেলের মাধ্যমে সংযুক্ত। আপনি এই টানেল ব্যবহার করে অনায়াসে ইংল্যান্ড থেকে ফ্রান্সে চলে আসতে পারবেন। দেশ দুটির মধ্যে দূরত্ব ৫০.৪৫ কিলোমিটার।

১০। আমরা কমবেশি সবাই “WWW” এই শব্দের সাথে পরিচিত। এর পূর্ণরুপ হচ্ছে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব। এবং এর আবিষ্কর্তা কিন্তু একজন ইংরেজ।

১১। ইংল্যান্ডে মানুষের চেয়ে মুরগীর সংখ্যা অনেক অনেক বেশি।

১২। ১০৬৬ থেকে ১৩৬২ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩০০ বছর ধরে ইংল্যান্ডের সরকারী ভাষা ছিল ফ্রেঞ্চ।

১৩। ইংল্যান্ডের মানুষেরাই চা পানের দিক দিয়ে বিশ্বের মধ্যে সেরা।

১৪। রবিন হুড কিন্তু একজন সত্যিকারের মানুষ। যদিও সবটুকু সিনেমাতে দেখানো চরিত্রের মতো না।

১৫। স্টিফেন হকিং, স্যার আইজ্যাক নিউটন, চার্লস ডারউইন এরা সবাই ইংলিশ বিজ্ঞানী ছিলেন।

১৬। ইংল্যান্ডের প্রধান বিমানসংস্থা ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ৷ দেশটির পরিবহন ব্যবস্থা উন্নতমানের সড়ক, বিমান, রেল ও নৌপথের নেটওয়ার্ক নিয়ে গঠিত। লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর বিশ্বের ব্যস্ততম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

১৭। শিক্ষার ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের বিশ্বজুড়ে সুনাম রয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়ারউইক স্কুল, কিংস কলেজ, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়, গ্রিনউইচ বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডনের কুইন ম্যারি বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি দেশটির বিখ্যাত সব স্কুল কলেজের নাম। এছাড়াও ইংল্যান্ডে অসংখ্য নাম করা স্কুল কলেজ রয়েছে।

১৮। ব্রিটিশ মিউজিয়াম লন্ডনে অবস্থিত মানুষের ইতিহাস এবং সাংস্কৃতির একটি জাদুঘর, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাদুঘরগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্বের সব অঞ্চলের মানুষের সাংস্কৃতির শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত, প্রায় ১৩ মিলিয়ন নিদর্শন এই জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।

১৯। তাছাড়া লন্ডন লাইব্রেরি পৃথিবীর বৃহৎ কয়েকটি গ্রন্থগারের মধ্যে একটি।

২০। ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস, বক্সিং, ব্যাডমিন্টন এই সব ধরনের খেলায় ইংল্যান্ডের রয়েছে আধিপত্য। তবে এখানকার মানুষ ফুটবল খেলাকেই বেশি পছন্দ করেন। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ড ফিফা বিশ্বকাপ জয়ের সুনাম অর্জন করেছে।

২১। ইংল্যান্ডের অর্থনীতি পুরো ইউরোপের মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম অর্থনীতি। এটি একইসাথে যুক্তরাজ্যের সর্ববৃহৎ অর্থনীতি।

২২। ইংল্যান্ডের সরকারী মুদ্রা পাউন্ড স্টার্লিং বা জিবিপি।

২৩। দেশটির মোট জিডিপি প্রায় ১.৫৬ ট্রিলিয়ন পাউন্ড। এবং মাথাপিছু আয় প্রায় ২৮ হাজার পাউন্ড।

২৪। ইংল্যান্ডের ডায়ালিং কোড হচ্ছে +৪৪।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com