মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০৬ অপরাহ্ন
Uncategorized

আমেরিকা প্রবেশে অবৈধ পথে হাজারো বাংলাদেশি

  • আপডেট সময় শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১

বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অবৈধ রুট এখন মেক্সিকো সীমান্ত। এই রুটে বাংলাদেশি মোহাম্মদ মিলন হোসেন মানবপাচারে আন্তর্জাতিক অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। মঙ্গলবার টেক্সাসের আদালত তাকে ৪৬ মাসের কারাদন্ড দিয়েছে। জানা গেছে, অবৈধপথে আমেরিকায় আসতে মেক্সিকো সীমান্তে হাজারো বাংলাদেশি জড়ো হয়েছেন। দুর্গমপথ পাড়ি দিয়ে, ৪০-৫০ হাজার ডলার খরচ করে তারা যুক্তরাষ্ট্রে আসছেন। এদের মধ্যে কেউ সফল হচ্ছেন কেউবা দিনের পর দিন সীমান্তে সুযোগের অপেক্ষায় ধুঁকে ধুঁকে মরছেন। অনেকেই দুর্গম যাত্রা পথেই মৃত্যুবরণ করছেন।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী বাংলাদেশি মিলনের পেশা ছিল অবৈধভাবে বাংলাদেশি মাইগ্র্যান্টদের মেক্সিকো হয়ে আমেরিকান সীমান্তে পৌঁছা দেওয়া। বিনিময়ে লাখ লাখ ডলার হাতিয়ে নিত মিলন ও তার সঙ্গীরা। এ কাজ করতে গিয়ে অবৈধ পথে আমেরিকা আসা আগ্রহী বাংলাদেশিদের জীবন ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে ঠেলে দিত তারা। আমেরিকার নিরাপত্তা ও আইনশৃংখলাও পড়তো হুমকির মুখে। মিলন এই কাজের জন্য বেছে নিয়েছিল মেক্সিকো রুট। নিরাপদে ব্যবসা ও অপকর্ম চালিয়ে যেতে মেক্সিকোর টেপাচুলা শহরে শুরু করেছিল হোটেল ব্যবসা। এই হোটেলই ছিল কাগজপত্রহীন বা অবৈধদের আমেরিকার পথে ‘সেভ হ্যাভেন’। এখান থেকেই বাস, প্লেন বা গাড়ির টিকেট ইস্যু করা হতো। বিভিন্ন রুটের পরিকল্পনা হতো মিলনের এই হোটেল থেকেই। মেক্সিকোর পথে পথে দালালদের হাতে আমেরিকাগামী বাংলাদেশিদের তুলে দেয়া হতো। মিলন নিজেই গড়ে তুলেছিল মানবপাচারে একটি আন্তর্জাতিক বলয়।

টেক্সাসের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টের আদালত মিলনের অপরাধের জন্য ৪৬ মাস কারাদন্ডের রায় প্রদান করেন। গত মঙ্গলবার ২৮ সেপ্টেম্বর আদালত এই রায় দেন। মিলন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের জেলখানায় আটক রয়েছেন।
কোর্টের তথ্যানুসারে, মোহাম্মদ মিলন ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারীদের সাথে ষড়যন্ত্র করে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিকদের সাউথ ও সেন্ট্রাল আমেরিকা হয়ে মেক্সিকো নিয়ে এসেছে। সেখান থেকে তাদের আনা হয় আমেরিকার সীমান্তে। মিলন বাংলাদেশিদের মেক্সিকো-আমেরিকা সীমান্ত অতিক্রম করতেও কো-স্পন্সর হিসেবে কাজ করতো। আমেরিকার জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের ক্রিমিনাল ডিভিশনের এসিট্যান্ট এটর্নি জেনারেল কেনিথ এ পোলাইট জুনিয়র বলেছেন, মিলন হোসেনের মতো যারা বিশ্বব্যাপী মানব পাচারে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। ভেঙে দেয়া হবে এসব ক্রিমিনালদের নেটওয়ার্ক।

টেক্সাসের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস এসিসট্যান্ট এটর্নি জেনিফার বি লাউরি বলেছেন, হোসেনের মতো ক্রিমিনালরা জীবনের আগে অর্থকে প্রাধান্য দেয়। ইমিগ্র্যান্টদের জীবনকে ভয়ংকর বিপদের মুখোমুখি দাঁড় করায়। বাংলাদেশি মাইগ্র্যান্টদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিত হোসেন। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের শেন ফোল্ডেন বলেন, ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের বড় একটি সাফল্য এই মামলা। এতে আমরা সারা বিশ্বব্যাপী রিসোর্স কাজে লাগিয়েছি। এতে ইউএস কাস্টমস এন্ড বর্ডার, মার্শাল সার্ভিস, মেক্সিক্যান গভর্নমেন্ট, সিআইএ ও এফবিআইসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করেছে।

এদিকে টেক্সাস ভিত্তিক অবৈধপথে মানব পাচার বিরোধী মানবিক সংগঠন ‘হিএমসিআরএ’ তথ্যানুসারে মেক্সিকোর বিভিন্ন শহরে হাজারো বাংলাদেশি মাইগ্র্যান্ট আমেরিকায় প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। দালালদের খপ্পড়ে পড়ে তারা নিঃস্ব। পথে পথে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেকে ইতিমধ্যে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলে রয়েছেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com