বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ আমেরিকা। যারা যোগ্য তাদের ভিসা দিচ্ছে মার্কিন সরকার। ফলে দিনকে দিন আমেরিকার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
আমেরিকা বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে উচ্চশিক্ষার অন্যতম জায়গা হয়ে উঠেছে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন শাখায় বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা দিয়ে থাকে একই সঙ্গে ছাত্রদের অর্থনৈতিক ক্ষমতা প্রদান করে। পাশাপাশি তাদের বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে।
এই স্বপ্নগুলো দেশের অনেক ছাত্র-ছাত্রীরাই পূরণ করতে চায়। কিন্তু এটা ততক্ষণ অসম্ভব যতক্ষণ না স্টুডেন্ট ভিসায় স্ট্যাম্প পড়ছে। তাহলে দেখা নিন কীভাবে সহজেই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়াটা সহজ করে তোলা যায়।
বর্তমানে তিন ধরনের স্টুডেন্ট ভিসা হয় আমেরিকায় পড়তে যাওয়ার জন্য। দেখে নেওয়া যাক সেগুলো।
প্রথমেই বলা যাক এফ১ স্টুডেন্ট ভিসার কথা। এফ১ স্টুডেন্ট ভিসা আপনার তখনই লাগবে যখন আপনার এক সপ্তাহে ১৮ ঘণ্টার বেশি সময় পড়তে হবে। এর মধ্যে গ্রাজুয়েট, আন্ডারগ্রাজুয়েট সমস্ত ধরনের কোর্স থাকে যেমন, এমএস, এমবিএ, ইত্যাদি। যিনি এফ১ ভিসার জন্য আবেদন করলেন তার স্বামী বা স্ত্রী অথবা সন্তান তার সঙ্গে যেতে পারেন এফ২ ভিসার সাহায্যে। কিন্তু এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে স্বামী/স্ত্রী যিনি যাচ্ছেন তিনি আমেরিকায় গিয়ে কোনো কাজ করতে পারবেন না। তাদের আলাদা করে আবেদন করতে হবে নিজের ভিসার জন্য।
এরপর বলা যাক জে১ এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ভিসার কথা। যারা কোনো এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে যোগদান করতে যাচ্ছেন তাদের এই ভিসা লাগবে। ফুলব্রাইট স্কলার, কিংবা অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীরা অল্প দিনের কোনো কোর্স করতে বিদেশে গেলে তারা এই ভিসার আবেদন করবেন। এছাড়াও কেউ যদি কোনো এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে গিয়ে স্থির করেন ভোকেশনাল ট্রেনিং নিতে চান পাশাপাশি তাহলেও সেক্ষেত্রে জে১ ভিসা অবশ্যই।
তৃতীয় এবং শেষ ধরনের ভিসা হচ্ছে এম১। এটি হচ্ছে ভোকেশনাল অথবা নন অ্যাকাডেমিক ভিসা। এই ভিসাটি কেবলমাত্র তাদের জন্যই সংরক্ষিত যারা ভোকেশনাল কিংবা টেকনিক্যাল স্কুলে পড়ার জন্য আমেরিকা যেতে চান। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে এই ভিসায় টাইম বেঁধে দেওয়া থাকে। তার বেশি কোনও ছাত্র সেখানে থাকতে পারবেন না।
একবারে একটাই পদক্ষেপ করুন
প্রথমে এসইভিপি অ্যাপ্রভুড ইউএস থেকে আই-১২০ আসার পর ভিসার অ্যাপ্লিকেশন ফিল করুন। নিশ্চয় ভাবছেন আই-১২০ কী? তাহলে এ ক্ষেত্রে বলি এটা হচ্ছে সার্টিফিকেট অব এলিজিবিলিটি ফর নন মাইগ্রেন্ট স্টুডেন্ট। অর্থাৎ অ-অভিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য যোগ্যতার প্রশংসাপত্র। একবার আপনি স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম সার্টিফায়েড স্কুল থেকে মনোনীত হয়ে গেলে একটি ফর্ম পাবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত স্কুলের অফিসিয়াল থেকে।
এক্ষেত্রে যা যা মনে রাখবেন
সঠিক ভাবে ভিসা ফর্ম ভরবেন। প্রতিটি উত্তর লিখবেন, যথাযথ উত্তর দেবেন। ভিসা ইন্টারভিউয়ের দিন সঙ্গে সমস্ত ডকুমেন্ট রাখবেন।
ইন্টারভিউয়ের সময় কনফিডেন্ট এবং নম্র থাকবেন। আপনার কোর্স, স্কলারশিপ, স্পন্সরশিপ, এসএটি, জিআরই, ইত্যাদি সম্পর্কে ভাল হয়ে তৈরি হয়ে যাবেন।
যিনি ইন্টারভিউ নেবেন তিনি কিন্তু দেখবেন যে আপনি ফিস দিতে সক্ষম কিনা সেই ভাবে নিজের সমস্ত উত্তর দেবেন।
যতটুকু জানতে চাইবেন ইন্টারভিউয়ার ঠিক ততটুকুই উত্তর দেবেন। তার কাছে কিন্তু আপনার জন্য বেশি সময় থাকবে না। এটা মনে রাখবেন।
যদি আপনি স্টুডেন্ট ভিসা না পান তাহলে কী হবে?
অনেক সময় দেখা গিয়েছে আই-১২০ পাওয়ার পর, ইন্টারভিউ দেওয়ার পরেও অনেকে স্টুডেন্ট ভিসা পাননি। যদি তেমনটা হয় ভেঙে পড়বেন না। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কথা বলে আবার আবেদন করুন। আপনার বিশ্ববিদ্যালয় কনস্যুলেটের কাছে আপনার হয়ে একটি চিঠি পাঠাবে সেক্ষেত্রে। অথবা আপনি পরবর্তী সেশনে আবার নতুন করে আবেদন করতে পারেন।
জেনে রাখা প্রয়োজন
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১৪ থেকে ৭৯ বছরের মধ্যে। এর উপরে বা নিচে হলে সেটাকে স্পেশাল কেস হিসেবে বিবেচনা করা হবে। যারা কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাকসেপ্টেড হবেন তারাই এফ১ ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। যদি আপনার শেষ এবং আগামী ডিগ্রির মধ্যে অনেকটা ফারাক তাহলে তাহলে কিন্তু আপনাকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে।