শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৪ অপরাহ্ন
Uncategorized

আফগানিস্তানে মেয়েরা আতঙ্কে, বাবাদের ঘুম হারাম

  • আপডেট সময় বুধবার, ২১ জুলাই, ২০২১

এক চিঠিতেই সব শেষ! আতঙ্কে দিন কাটছে আফগান মেয়েদের। আর বাবাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে দুশ্চিন্তায়। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের বেশ কিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ এই মুহূর্তে তালেবানের হাতে। এখনো পুরো দেশ দখলে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তাদের যুদ্ধ অব্যাহত। যুদ্ধরত তালেবানদের জন্য পাত্রী খুঁজছে তারা। এই পরিস্থিতিতে নতুন এক ফতোয়া জারি করেছে তালেবানরা। দখলকৃত অঞ্চলের ১৫ বছরের বেশি মেয়ে এবং ৪৫ বছরের বয়সের নিচে যেসব বিধবা মহিলা রয়েছেন তাদের নামের তালিকা অবিলম্বে তালেবানের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ জারি হয়েছে এলাকার মোল্লা-ইমামদের ওপর। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

তালেবানের কালচারাল কমিশনের তরফ থেকে বিবৃতি জারি করে দখলকৃত অঞ্চলগুলোর ইমাম কিংবা ধর্মীয় নেতার কাছে এ নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই তালিকা পৌঁছানোর তাগিদ রয়েছে চিঠিতে। বিয়ের পর পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তানে নিয়ে যাওয়া হবে সংশ্লিষ্ট মেয়ে বা মহিলাকে। সেখানে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করার পর তারা হৃত গৌরব ফিরে পাবেন, এমনই দাবি তালেবানের। স্থানীয়দের আশঙ্কা, তালিকা হাতে পেতেই হিংস্র হয়ে উঠবে তালেবান। বাড়ি বাড়ি ঢুকে মেয়ের বাবাদের বাধ্য করবে বিয়ে দিতে। রাজি না হলে তুলে নিয়ে যাবে মেয়েদের। এভাবে একে একে প্রাপ্তবয়স্ক সব মেয়েকেই বিয়ে দেওয়া হবে যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা বিভিন্ন যোদ্ধাদের সঙ্গে।

বৃদ্ধ হাজি রোজি বাইগ তখরের খাজা বহউদ্দিন জেলার বাসিন্দা। তার দুই মেয়ে। একজনের বয়স ২৩ বছর, অপর জন ২৪ বছরের। তিনি জানান, ‘আমি তো বটেই, আমার পরিচিত যাদেরই মেয়ে আছে, সবাই দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। মেয়েরা আতঙ্কে নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে শুধুই কাঁদছে। শুনতে পাচ্ছি, মেয়েদের তুলে নিয়ে গিয়ে জঙ্গিদের সঙ্গে বিয়ে দিচ্ছে তালেবানরা।’ তিনি বলেন, ‘সরকারের শাসনে আমরা কত শান্তিতে ছিলাম! অন্তত আমাদের স্বাধীনতা ছিল।’ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘তালেবান দখল নেওয়ার পর থেকেই আমরা আশঙ্কায় ভুগছি।

জোরে কথা বলতে পারছি না, গান শুনতে পারছি না, সিনেমা দেখা বারণ। এমনকি মহিলারা বাড়ির সামনে বাজারটুকু যেতে সাহস পাচ্ছেন না।’

আপনার বাড়ির মহিলারা সুরক্ষিত? প্রশ্নের উত্তরে বৃদ্ধ জানান, ‘ওদের (তালেবান) এক সাব-কমান্ডার এসেছিল। বলল বাড়িতে ১৮-র বেশি বয়সি মেয়ে রাখা যাবে না। এতে পাপ হবে। বিয়ে দিতেই হবে।’ কাঁদতে কাঁদতে হাজি বলেন, ‘আমার বাড়িতে কে কে আছে, এসে দেখে গিয়েছে তারা। আমি নিশ্চিত, আমার চোখের সামনে ওরা আমার দুই মেয়েকে তুলে নিয়ে যাবে। ওদের জোর করে জঙ্গিদের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হবে।’ মহিলারা বাড়ি থেকে বের হলে তার আগে অনুমতি নিতে হবে স্থানীয় তালেবান নেতার। আর হিজাব বাধ্যতামূলক তো আছেই। তবে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে তালেবানরা। মহিলা শিক্ষিকা হলে তবেই বাইরে যাওয়া যাবে। এমন নিয়ম চালু করেছে তারা। নিয়ম ভাঙলেই শাস্তি।

আফগান-তালেবান বৈঠক শেষ : কোন প্রকার ঐকমত্য ছাড়াই শেষ হলো আফগান-তালেবান বৈঠক। তবে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনার গতি বাড়াতে শিগগরই আবারও বৈঠকে বসার কথা জানিয়েছেন তালেবান ও আফগান সরকারের প্রতিনিধিরা। কাতারের রাজধানী দোহায় দুদিনের আলোচনা শেষে রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ কথা জানান। গত কয়েক মাস ধরেই তালেবান বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন আফগান সরকারের প্রতিনিধিরা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com