হিন্দু কিংবা মুসলিম সকল ধর্মের মানুষ যে পবিত্র স্থানে একসাথে উপসনা করে তা হল আজমীর শরীফ।হযরত খাজা মইনুদ্দিন চিশতি (র:) এর দরগাহ যা খাজা বাবার মাজার নামেও পরিচিত। ভারতের রাজস্থানের আজমীর জেলায় অবস্থিত।
একমাত্র সর্বধর্ম মিলনক্ষেত্র এই আজমীর শরিফ দরগা। সকল সম্প্রদায়ের কাছে মহান তীর্থস্থান এটি। লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রান মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকে মাজার। সম্রাট আকবর ১৫৬৭ সালে ৩০ মিটার উচুঁ মূল প্রবেশ পথের বুলুন্দ দরজাটি তৈরি করেন।
আজমীরের খাজা বাবার মাজারের আরেকটি দর্শনীয় বস্তু হলো ১২০ মন ও ৮০ মন চাউলের বিরিয়ানী রান্না করার দুটি পাত্র। প্রতি বছর ১-৬ রজব তার ওফাত দিবসে এখানে ওরশ অনুষ্ঠিত হয়।
খাজা মইনুদ্দিন চিশতী হলেন চিশতীয় ধারার ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত সুফি সাধক।তিনি ১১৪১ সালে জন্মগ্রহণ করেন ও ১২৩৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি গরিবে নেওয়াজ নামেও পরিচিত। মইনুদ্দিন চিশতীই উপমহাদেশে প্রথম এই ধারা প্রতিষ্ঠিত ও পরিচিত করেন। তিনি ভারতে চিশতী ধারার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক ধারা বা সিলসিলা এমনভাবে পরিচিত করেন। পরবর্তীতে তাঁর অনুসারীরা যেমন, বখতিয়ার কাকী, বাবা ফরিদ, নাজিমদ্দিন আউলিয়াসহ আরো অনেকে ভারতের ইতিহাসে সুফি ধারাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।
ধারনা করা হয়, খাজা মইনুদ্দিন চিশতী ৫৩৬ হিজরী/১১৪১ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব পারস্যের সিসটান রাজ্যের চিশতীতে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি পারস্যে বেড়ে উঠেন। খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী বোখারা থেকে নিশাপুরে আসেন। সেখানে চিশতীয়া তরীকার অপর প্রসিদ্ধ সুফি সাধক খাজা উসমান হারুনীর নিকট মুরীদ হন/শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।
ধর্ম প্রচার
খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারে কিংবদন্তিতুল্য একজন ঐতিহাসিক সুফি ব্যক্তিত্ব।তিনি স্বীয় পীর উসমান হারুনীর নির্দেশে ভারতে আগমন করে মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দেন এবং তারই মাধ্যমে বহু লোক ইসলাম গ্রহণ করেন।
কিভাবে যাবেন
বাংলাদেশ থেকে আজমীর শরীফ যেতে চাইলে ঢাকা থেকে সরাসরি কলকাতাগামী বাসের টিকেট কিনতে পারবেন। কলকাতা এসে শিয়ালদহ থেকে সরাসরি আজমীরের ট্রেন পাওয়া যায়। এর মধ্যে অনন্যা এক্সপ্রেস উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও শিয়ালদহ স্টেশন থেকে আজমীর সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসে। ট্রেনটি আজমীরের রেল স্টেশনে নামিয়ে দেওয়ার পর মাজার সড়কে যেতে অটো রিকশায় ৩০ রুপি, রিকশায় ২০ রুপিতে যাওয়া সম্ভব।