আকাশ পথের ভাড়া নৈরাজ্য চলছেই। সপ্তাহে সপ্তাহে বাড়ছে টিকিটের দাম। বিশেষ করে, মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ারলাইন্সগুলোর ভাড়া তিন মাসে বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ওমরাহসহ সাধারণ যাত্রী ও প্রবাসীরা। সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার দাবি যাত্রীদের। টিকিট কালোবাজারি বন্ধে একই দাবি এজেন্সিগুলোর।
আগস্টে পট পরিবর্তনের পর প্রবাসীদের জন্য শাহজালাল বিমানবন্দরে নানা সুবিধা যোগ হলেও ধরাশায়ী হচ্ছেন টিকিট কিনতে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের যেকোনো রুটের টিকিট মূল্য শেষ তিন মাসে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
বিদেশ যাওয়ার বাড়তি এই চাপ আর্থিক সংকটে ফেলছে তাদের। গত কয়েক বছরের টিকিট কালোবাজারির মূলোচ্ছেদ চান রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। প্রবাসীরা জানান, বিদেশ থেকে আপডাউন টিকিট কেটে এলে যে দাম পড়ে, দেশ থেকে সিঙ্গেল টিকিটের সমান পড়ে যায়। এতে অসহায় যাত্রী সাধারণ।
সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে বেশি চাপে পড়েছে ওমরা যাত্রী ও সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলো। কম টাকায় ওমরা করতে চাওয়া আগ্রহীরা যেমন শঙ্কায়, তেমনি প্যাকেজ তৈরি করতে গিয়ে অস্বস্তিতে এজেন্সি মালিকরা। এ বিষয়ে বিমান মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ বলেন, এয়ারলাইন্সের পলিসি বা তাদের সফটওয়্যারের মেকানিজম ওইভাবেই করা, চাহিদা যত বাড়বে টিকিটের দামও তত বাড়তে থাকবে।
জ্বালানি খরচ না বাড়লেও সৌদিগামী বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের মার্চের টিকিটের দাম এখনই দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা। যা তিন মাস আগেও ছিল ৭৫ থেকে ৮০ হাজার টাকায়। আকাশ পথের লাগামহীন ভাড়ায় যোগ হওয়া বাড়তি শুল্ক মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হচ্ছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. শফিকুর রহমান জানান, বিমানের ভাড়া বাড়েনি। এখনো সেৌদি আরবে বিমানের আসা-যাওয়ার ভাড়া সর্বোচ্চ ৯০ হাজার টাকার মধ্যে। তিনি বলেন, বিমানে কোন টিকিট ব্লক হচ্ছে না। তবে অন্য এয়ারলাইন্স ভাড়া বাড়ালে আমাদের করার কিছুই নেই।
অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, শুল্ক-ট্রাভেল ট্যাক্স বাড়িয়ে সরকার নিজেই টিকিটের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে চাপ বাড়ছে মানুষের ওপর।
তথ্য বলছে- ইতিহাদসহ কিছু ফ্লাইট বন্ধ হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। কিন্তু ভাড়া বাড়াচ্ছে মূলত কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা গ্রুপ টিকিটিং।
মধ্যপ্রাচ্যকে পুঁজি করেই টিকিট কালোবাজারির গড়ে তুলেছে একটি চক্র। যাত্রীদের অভিযোগ আর স্টেকহোল্ডারদের নানা পরামর্শ থাকলেও কোনো পরিবর্তন মিলছে না। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে না দেখলে টিকিট কালোবাজারির সিন্ডিকেট বন্ধ হবে না বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।