আইটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে বর্তমানে যে কটি প্রতিষ্ঠান আলোচনায় এসেছে, এগুলোর মধ্যে স্মার্টটেক আইটি সলিউশেনস ইনক একটি। তারা করোনার আগে জ্যাকসন হাইটসে ইনপারসন ক্লাস করাত। কিন্তু করোনার সময়ে তারা পুরোপুরি অনলাইনে ক্লাস করায়। করোনার সময়ে অনেকেই চাকরি হারান, কারো কারো কাজ কমে যায় আবার কেউ কেউ আংশিক বা পুরোপুরি আইটিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে বছরে বেকার হয়ে পড়েন। এই অবস্থায় তখন মানুষ বেকার ভাতা পেলেও পাশাপাশি চিন্তা করতে থাকেন, এমন একটি পেশা বেছে নিতে, যাতে বাসায় বসে কাজ করে ভালো ইনকাম করা সম্ভব। করোনার কারণে অনেকেই তাদের পেশা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেন। সে হিসেবে তারা আইটি কোর্স করেন। যারা সফলভাবে আইটি কোর্স সম্পন্ন করেছেন তারা এই সেক্টরে চাকরিও পেয়েছেন। কম সময়ে কোর্স করেও আইটির বিভিন্ন সেক্টরে কাজ পাওয়া সম্ভব।
যদিও আইটি প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারীদের তারা ৮০ হাজার ডলার থেকে এক লাখ ডলার পর্যন্ত বেতনে চাকরি প্রদানে সহায়তা করছে। তারা জানায়, তারা মূলত মানুষকে আইটি জবের স্বপ্নপূরণে সহায়তা করে। ম্যানুয়েল অ্যান্ড অটোমেশন কিউএ ট্রেনিং করায়। এর মধ্যে জাভা সেলিনিয়াম, এসকিউএল, মোবাইল টেস্টিং, এপিআই টেস্টিং প্রশিক্ষণ রয়েছে। তাদের দাবি, চার মাস প্রশিক্ষণ দিয়ে একজন প্রশিক্ষণার্থীকে তারা আইটি প্রফেশনাল হিসেবে তৈরি করবে সক্ষম। তারা বলেছে, আইটিতে জব করার জন্য কম্পিউটার ব্যাকগ্রাউন্ড অথবা আইটি এক্সপেরিয়েন্সের দরকার নেই।
প্যান্ডামিকের আগে ও প্যান্ডামিকের পুরো কঠিন সময়ে স্মার্টটেক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরি পেয়েছেন এমন প্রশিক্ষণার্থীদের নিয়ে গেট টুগেদারের আয়োজন করে স্মার্টটেক। সেখানে প্রায় ৩০-৩৫ জন সাবেক প্রশিক্ষণার্থী ও চাকরিলাভকারী যোগ দেন। স্মার্টটেকের কর্মকর্তারা জানান, এখানে উপস্থিত সবাই স্মার্টটেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং চাকরি পেয়েছেন। এখন তারা ভালো আছেন। সেই সাথে তারা পরিবার ও আত্মীয়স্বজনকেও আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারছেন। দেশেও অর্থ পাঠাতে পারছেন।
গেট টুগেদারে স্মার্টটেকের কর্মকর্তা সারোয়ার, লিটন, সোবহানসহ অন্য কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন। এ ছাড়া প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্য থেকে জাহিদ নামের একজন স্মার্টটেকের প্রশিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন, তিনিও বক্তৃতা করেন। এ ছাড়া টাইম টেলিভিশনের সিইও আবু তাহের, সাংবাদিক সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
স্মার্টটেকের কর্মকর্তা জানান, শুরুতে পাঁচজন মিলে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। তারা আইটি সেক্টরে বিভিন্ন মানুষকে সহায়তা করার জন্যই মূলত এটি করেন। এর মাধ্যমে তারা আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন ও চাকরি পেতে সহায়তা করছেন। তারা জানান, অনেকেই অড জব করছেন। কেউ কেউ ট্যাক্সি চালাচ্ছেন। অনেক পরিশ্রম করছেন। কিন্তু চাইলে তারা ওইসব কাজ না করে, আইটির ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে সহজেই চাকরি পেতে পারেন। এতে তার যেমন কষ্ট কমবে, তেমনি সামাজিক মর্যাদাও বাড়বে। বাসা থেকেও এই কাজ করার সুযোগ আছে। এই সেক্টরে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ ডলার বেতনের চাকরি পাওয়াও সম্ভব।
জাহিদ বলেন, আমি প্রথমে প্রশিক্ষণার্থী ছিলাম। পরে প্রশিক্ষক হয়েছি। আমি কোর্স করার পর প্রথমে সিটিতে চাকরি পাইনি। আউট স্টেটে পেয়েছিলাম। পরে অবশ্য নিউইয়র্কে চাকরি পেয়েছি। তিনি তার সময়ের প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও চাকরি পাওয়া নিয়ে নানা স্মৃতিচারণা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে উপস্থিত সবাইকে গোলাপ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। বক্তৃতা পর্ব শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে যারা চাকরি পেয়েছেন, তাদের নিয়ে কেক কাটা হয়। এরপর সবাই নৈশভোজ করেন। নৈশভোজে স্মার্টটেকের কর্মকর্তাদের বাসা থেকে রান্না করে আনা মজাদার সব খাবার পরিবেশন করা হয়। সবশেষে গেট টুগেদারে অংশ নেওয়া সবাইকে স্মার্টটেকের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়।