বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৭:২৭ অপরাহ্ন
Uncategorized

অস্ট্রেলিয়া

  • আপডেট সময় বুধবার, ৩০ জুন, ২০২১

অস্ট্রেলিয়ার সরকারী নাম “কমনওয়েলথ অফ অস্ট্রেলিয়া”। এটি এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্বে ওশেনিয়া অঞ্চলে অবস্থিত। কাছের তাসমানিয়া দ্বীপ নিয়ে এটি কমনওয়েল্‌থ অফ অস্ট্রেলিয়া গঠন করেছে। দেশটির উত্তরে তিমুর সাগর, আরাফুরা সাগর ও টরেস প্রণালী; পূর্বে প্রবাল সাগর এবং তাসমান সাগর; দক্ষিণে ব্যাস প্রণালী ও ভারত মহাসাগর; এবং পশ্চিমেও ভারত মহাসাগর অবস্থিত। দেশটি পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় ৪০০০ কিমি এবং উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ৩৭০০ কিমি দীর্ঘ। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের ক্ষুদ্রতম মহাদেশ, কিন্তু ৬ষ্ঠ বৃহত্তম দেশ।

১। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম বসতিস্থাপক ছিল এখানকার আদিবাসী জাতিগুলি। এরা প্রায় ৫০,০০০ থেকে ৬০,০০০ বছর আগে দেশটিতে অভিগমন করে। ১৭শ শতাব্দীর আগ পর্যন্ত বহির্বিশ্বের কাছে দ্বীপটি অজানাই ছিল। ১৭৮৮ সালে দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার পোর্ট জ্যাকসনে প্রথম স্থায়ী উপনিবেশ সৃষ্টি করা হয়; এটি ছিল ব্রিটিশ কয়েদিদের উপনিবেশ। এটিই পরবর্তীকালে বড় হয়ে সিডনী শহরে পরিণত হয়। ১৯শ শতক জুড়ে অস্ট্রেলিয়া এক গুচ্ছ ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে কাজ করত। ১৯০১ সালে এগুলি একত্র হয়ে স্বাধীন অস্ট্রেলিয়া গঠন করে।

২। অস্ট্রেলিয়া ৬টি অঙ্গরাজ্য নিয়ে গঠিত- নিউ সাউথ ওয়েলস, কুইন্সল্যান্ড, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, তাসমানিয়া, ভিক্টোরিয়া ও পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া। এছাড়াও আছে দুইটি টেরিটরি— অস্ট্রেলীয় রাজধানী টেরিটরি এবং উত্তর টেরিটরি।

৩। ৭৬ লাখ ৯২ হাজার ২৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটিতে প্রায় ২ কোটি ৫৪ লাখ মানুষের বসবাস। আয়তনের দিক দিয়ে এটি বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম দেশ।

৪। অস্ট্রেলিয়ার সরকারী ভাষা হচ্ছে ইংরেজি। এছাড়াও কিছু উপভাষা দেশটিতে প্রচলিত রয়েছে।

৫। দেশটির প্রধান ধর্ম হচ্ছে খ্রিস্টধর্ম। দেশটির প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষ এই ধর্মে বিশ্বাসী।

৬। অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরা। প্রশাসনিকভাবে এটি অস্ট্রেলীয় রাজধানী অঞ্চলের উত্তর অংশটি গঠন করেছে। ক্যানবেরা একটি আধুনিক ও দ্রুত প্রসারমান শহর। সিডনি শহর থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ও মেলবোর্ন থেকে ৬৬০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত শহরটি অস্ট্রেলিয়ার এই দুই প্রধানতম নগরীর মধ্যবর্তী একটি জায়গায় অবস্থিত।

সিডনী অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম শহর। এটি নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যের রাজধানী এবং অস্ট্রেলিয়া তথা ওশেনিয়ার বৃহত্তম শহর। শহরটি অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলের জ্যাকসন বন্দরকে ঘিরে অবস্থিত।

৭। অস্ট্রেলিয়াতে মানুষের চেয়ে ক্যাঙ্গারুর সংখ্যা বেশি। এখানেই বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর ১০ টি সাপ পাওয়া যায়।কুইন্সল্যান্ডের তীরের কাছে অবস্থিত ফেয়ারফ্যাক্স দ্বীপ গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের অংশ।

৮। অস্ট্রেলিয়া যদি একটি শহর হতো তবে তা ২৩.৫ মিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে বিশ্বের সপ্তম জনবহুল শহর হতো। এই তালিকার ওপরে রয়েছে টোকিও, গুয়াংঝু, সাংহাই, জাকার্তা, সিউল এবং দিল্লি।

৯। গ্রিসের এথেন্সের পর অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন এ সবচেয়ে বেশি সংখ্যক গ্রিক জনগোষ্ঠীর বাস।

১০। এখানকার ৫৪ শতাংশ পরিবারের অন্তত ২টি করে গাড়ি রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় যাত্রীর তুলনায় গনপরিবহনের সংখ্যা বেশি যা প্রায় ১৩.৩ মিলিয়ন।

১১। গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ বিশ্বের বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর। এটি অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব সীমান্ত ধরে প্রায় ২০১০ কিমি জুড়ে বিস্তৃত। এটি আসলে প্রায় ২৫০০ প্রাচীর ও অনেকগুলি ছোট ছোট দ্বীপের সমষ্টি।

১২। নোটপ্যাড, বিমানে দুর্ঘটনা রেকর্ডকারী যন্ত্র ব্ল্যাকবক্স এবং প্রথম ফ্রিজ অস্ট্রেলিয়াতেই আবিষ্কৃত হয়।

১৩। অস্ট্রেলিয়ায় পুরুষদের চেয়ে নারীদের সংখ্যা এক লাখ বেশি। এর ৮টি রাজ্যের ৬টিতে পুরুষদের সংখ্যা ব্যাপকহারে কম।

১৪। এখানে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন ধনশালী যা অস্ট্রেলিয়ার মোট জনগণের ২২ শতাংশ। এরা বিশ্বের মোট ব্যক্তিগত সম্পদের ৫০ শতাংশের মালিক।

১৫। অস্ট্রেলিয়াতে হিলিয়ার নামে একটি লেক অবস্থিত। এই লেকটির রং হচ্ছে গোলাপি।

১৬। এখানে প্রতি ১০টি পরিবারের মধ্যে একটি পরিবারের মোট সম্পদের মূল্য ১.৬ মিলিয়ন ডলার। এদের মধ্যে এক শতংশের সম্পদ ৫ মিলিয়ন ডলারের সমান।

১৭। অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল হাইওয়ে, “হাইওয়ে ওয়ান” বিশ্বের সবচেয়ে বড় ন্যাশনাল হাইওয়ে। এর মোট দৈর্ঘ্য ১৪,৫০০ কিলোমিটার। এই হাইওয়ে পুরো অস্ট্রেলিয়া জুড়ে অবস্থিত।

১৮। অস্ট্রেলিয়াতে ১৮৪০ সালে সর্বপ্রথম উট নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াতেই বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উট পাওয়া যায়। এমনকি অস্ট্রেলিয়া সৌদিআরব এ উট রপ্তানি করে থাকে।

১৯। অস্ট্রেলিয়াতে ১০ হাজার সমুদ্রিক বিচ আছে। আপনি যদি প্রত্যেক দিন একটি করেও বিচ ভ্রমন করেন তাহলেও সবগুলো বিচে যেতে আপনার প্রায় ২৭ বছর লেগে যাবে।

২০। অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৫ শতাংশ অন্য কোন দেশে জন্মগ্রহণ করা।

২১। এখানে বিদ্যুতের দাম বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এখানে বাড়ির বাল্ব বদলাতে হলেও লাইসেন্স প্রাপ্ত ইলেক্ট্রিশিয়ান ডাকতে হয়। এটা এই দেশের একটা আইন।

২২। অস্ট্রেলিয়াতে ছবির শুটিং এর জন্য কিত্রিম বৃষ্টি তৈরি করা আইনত নিষিদ্ধ। পানি যাতে নষ্ট না হয় সেইজন্য এই আইন তৈরি করে হয়েছিল।

২৩। গাড়িতে সিটবেল্ট পরার আইন ১৯৭০ সালে সর্বপ্রথম অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন এই চালু করা হয়েছিল।

২৪। অস্ট্রেলিয়ার মুদ্রার নাম হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান ডলার বা AUD।

২৫। দেশটির মোট জিডিপি প্রায় ১.৫০০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এবং মাথাপিছু আয় প্রায় ৬০ হাজার মার্কিন ডলার।

২৬। অস্ট্রেলিয়ার ডায়ালিং কোড হচ্ছে +৬১।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com