বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৫:১৩ অপরাহ্ন

অসাধারণ সৌন্দর্যের হাতছানি হাম হাম ঝরনা

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০২৩

হাম হাম’ অনেকে বলেন হাম্মাম (গোসল খানা)। আসলে কোন অর্থবহ শব্দ দিয়ে এ নামকরণ নয়। ঝরনার শব্দ দূর থেকে শুনতে লাগে হাম হাম, তাই এ ঝরনা নাম ‘হাম হাম’ (এটা আমাদের গাইডের বক্তব্য) ‘হাম হাম’ এমন একটা জায়গা। যেখানে পৌছানোর পর পথের ক্লান্তি আর ক্লান্তি মনে হবে না। অসাধারণ, অসাধারণ, অসাধারণ……… বর্ণনা করাটা কঠিন। প্রায় ৫০ ফিট চওড়া (আমরা বেশী চওড়া পেয়েছি ঝুম বৃষ্টির মধ্যে যাওয়ার জন্য)

আমরা ৬ জনের গ্রুপ গত ২০ জুলাই হামহাম ঘুরতে গিয়েছিলাম। গ্রুপের ৩ জন বান্দরবনে ট্র্যাকিং করে অভ্যস্ত। বাকিদের ব্রিফিং মিটিং এ বারবার বলে দেওয়া হয়েছে ১৩ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত অন্ততঃ ৪ কিলোমিটার করে হাটতে। এও বলা হয়েছে- এটা অভিনয় নয় যে শাহরুখ খানের মতো ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে অভিনয় করে দিলাম। কে শোনে কার কথা। যথারীতি ভুগতেও হল বেশ। একজনকে আমরা মোটামুটি টেনেটুনে নিয়ে গেছি। সবচে ভুগেছি কাদার কারণে। অবিরাম বৃষ্টির কারণে পুরো রাস্তা ছিল থকথকে কাদা। পাহাড়ি রাস্তাই পা এক জায়গাতে ফেলার পর তা যদি অন্য জায়গা চলে যায়, তবে তা বেশ ভয়াবহ। প্রতি পদক্ষেপেই সেই ছড়া মনে হয়- পা পিছলে ধরাম করে আমি পরেছি।

আমরা হাটা শুরু করেছি চাম্পারাই বাজার থেকে। শুকনা মৌসুম হলে কলাবন পাড়া থেকে শুরু করতে পারতাম। সে ক্ষেত্রে প্রায় ৫০ মিনিট সমতল পথ কম হাটতে হতো। আমাদের ১ জনের গতি শ্লথ হওয়াতে আমরা যাওয়ার সময় তিন ঘণ্টা ১৫ মিনিট সময় নিয়েছি। আসতে সময় লেগেছে দুই ঘণ্টা ২০ মিনিট। ফেরার পর আমদের দুই সদস্যের হাটার স্টাইল পরিবর্তিত হয়ে গেল যাকে বলে চেগায়ে হাটা। দেখতে অভূতপূর্ব- হাসি চেপে রাখা কষ্টকর।

ট্যুরের বাকী সময় এই দুই জন আমাদের বিনামুল্যে আনন্দ দিয়েছেন। সামনের বার হাটা প্রাকটিস না করে গেলে আমি সে হাটার ভিডিও পোস্ট করে দেব। হুমকি দিলাম।

হামহাম  মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে আদমপুর বিট এলাকায় অবস্থিত।  যাত্রা শুরু করতে পারেন শামসের নগর বা শ্রীমঙ্গল থেকে। যেখান থেকেই শুরু করুন না কেন যত সকালে সম্ভব রওনা দেবেন। তাতে হামহামের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য হাতে একটু বেশী সময় পাবেন। শীত মৌশুমে গেলে  প্রথমে যেতে হবে কলাবন পাড়া।

আর বর্ষাতে গেলে একটু আগে চাম্পারাই বাজার থেকেই শুরু করতে হবে এবং প্রায় ৫০+৫০ মিনিটের সমতল হাঁটা পথ যুক্ত হবে। শীতে কলাবন পাড়া পর্যন্ত সিএনজি বা সাধারণ বাহন নিয়ে যাওয়া যায় (সিএনজিতে যাওয়া আসা ১২০০ টাকা মত নেবে)। এরপর বাকীটা প্রায় ৩ ঘণ্টার হাটা পথ।  মশা থেকে বাঁচার  জন্য সাথে অডোমস নিয়ে নেওয়া ভালো।

হাঁটা পথে- টুকটাক জোঁক ধরতে পারে। পথে হাটার জন্য লাঠি কিনতে পাওয়া দাম ৫ টাকা যায়। মজবুত দেখে একটা নিয়ে নিলে সুবিধেই হবে।

পরিচয় নিশ্চিত হয়ে একজন গাইড সাথে নিয়ে নেওয়া ভালো।  গাইডের জন্য ৩০০ থেকে ৬০০ পর্যন্ত খরচ হওয়া যুক্তিসঙ্গত।

চাম্পারাই বাজার পৌছে সেখানে আপনি গাইড পেয়ে যাবেন। গাইড নেওয়ার সময় অবশ্যই অনেক দরদাম করে নিবেন।

বুরহানুর রহমান

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com