1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
অভিবাসী কর্মী ছাড়া কয়েক দশকের মধ্যে ধস নামবে জার্মান অর্থনীতিতে
শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০২:১২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
ফ্লাইট বদলের অপেক্ষাকে উপভোগ্য করে তুলুন চ্যাটজিপিটির পরামর্শে ফ্রান্সে স্থায়ী বসবাস মার্কিন নারীর দিচ্ছে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ, আবেদন করবেন যেভাবে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ‘আন্তর্জাতিক’ ঘোষণা স্থগিত কোনরকম পোশাক পরেন না এই গ্রামের বাসিন্দারা বস্টনে ভ্রাম্যমাণ পাসপোর্ট সেবাকে ঘিরে তীব্র বিতর্ক ও ক্ষোভ এবারও যুক্তরাষ্ট্রের ডিভি লটারির সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকছে বাংলাদেশ এক প্রশ্নেই ভিসা বাতিল শিক্ষার্থীর, এফ-১ ভিসা নিয়ে নতুন বিতর্ক ফিনল্যান্ড – যেখানে পড়াশোনা মানে শুধু ডিগ্রি নয়, এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা নাছোড়বান্দা এক অভিবাসীর পাল্লায় পড়েছে যুক্তরাজ্য

অভিবাসী কর্মী ছাড়া কয়েক দশকের মধ্যে ধস নামবে জার্মান অর্থনীতিতে

  • আপডেট সময় বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অভিবাসীদের আনা ছাড়া ইউরোপের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানি তার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ধরে রাখতে পারবে না৷ বার্টেলসমান ফাউন্ডেশনের নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য৷

এতে বলা হয়েছে, শ্রমবাজারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মী ধরে রাখতে হলে ২০৪০ পর্যন্ত প্রতি বছর অন্তত দুই লাখ ৮৮ হাজার অভিবাসী কর্মীর প্রয়োজন হবে৷

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ৮৮ পৃষ্ঠার সমীক্ষাটি প্রকাশ করা হয়৷ এর মধ্য দিয়ে মূলত ‘‘জার্মান শ্রমবাজার স্থিতিশীল রাখা এবং কর্মী চাহিদা মেটাতে অভিবাসন কতটা গুরুত্বপূর্ণ’’ তা তুলে ধরা হয়েছে৷

বার্টেলসমান সমীক্ষাটি পরিচালনা করেছেন স্টেট ইনস্টিটিউট ফর এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চ (আইএবি) এবং কোবুর্গ ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেসের অর্থনীতিবিদেরা৷

১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বার্টেলসমান স্টিফটুং জার্মানির বৃহত্তম ফাউন্ডেশনগুলোর একটি৷ চারটি দেশে ৩৩০ জন কর্মী রয়েছে এই সংস্থাটির৷ গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যেই কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি৷

অভিবাসন ছাড়া কী হবে জার্মানির শ্রমবাজারে?

জার্মানিতে প্রবীণ মানুষের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে৷ এর বিরূপ প্রভাব পড়তে যাচ্ছে জার্মান শ্রমবাজারে৷

নতুন এই সমীক্ষাটি বলছে, শ্রমঘাটতির প্রভাব বেশ নাটকীয়ভাবে আঘাত করবে দেশটির অর্থনীতিকে৷ এমন অবস্থায় জার্মানি যদি অভিবাসীদের তাদের শ্রমবাজারে যুক্ত হওয়ার সুযোগ না দেয়, তাহলে ২০৬০ সালের মধ্যে চাহিদার তুলনায় কর্মী কমবে চার ভাগের এক ভাগ৷

বার্টেলসমান ফাউন্ডেশনের গবেষণা বলছে, ২০৪০ সালের মধ্যে জার্মানিতে কর্মীর সংখ্যা ১০ শতাংশ কমে যাবে৷ বর্তমানে জার্মানির শ্রমবাজারে যুক্ত আছেন চার কোটি ৬৪ লাখ কর্মী৷ তা কমে হবে চার কোটি ১৯ লাখ৷ এ অবস্থা বজায় থাকলে ২০৬০ সালের মধ্যে শ্রমশক্তি ২৫ শতাংশ কমে হবে তিন কোটি ৫১ লাখ৷

বার্টেলসমান গবেষণার দুই গবেষকের একজন হলেন সুজানে শুলৎস ৷ তিনি বলেন, ‘‘জনসংখ্যাগত পরিবর্তন অর্থাৎ বেবি বুমারদের (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে যারা জন্ম নিয়েছেন) অবসর নেয়াটা জার্মান শ্রমবাজারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে৷ আর সেই ঘাটতি পূরণ করতে হলে অভিবাসীদের বিকল্প নেই৷’’

এ ধরনের পরিস্থিতি এড়িয়ে কর্মক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মী নিশ্চিত করতে হলে, ২০৪০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর জার্মানিতে দুই লাখ ৮৮ হাজার কর্মীর প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা৷ তারা বলছেন, এসব কর্মীদের নিয়োগ দিতে হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকেই৷

অভিবাসীদের প্রতি আন্তরিক হওয়ার আহ্বান

গবেষক শুলৎস মনে করেন, জার্মানির অভিবাসন বিষয়ক সংশোধিত আইনটি দেশটির প্রতি আগ্রহী কর্মীদের জন্য সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে৷ একইসঙ্গে তিনি আরো বলেন, কর্তৃপক্ষ, কোম্পানি এবং পৌরসভাগুলোকে অভিবাসীদের প্রতি আরো আন্তরিক হতে হবে৷ কারণ, কর্মী হিসাবে যারা জার্মানিতে আসবেন তারা দীর্ঘসময় ধরে এই দেশটিতে বসবাস করবেন৷

আরও পড়ুন
দক্ষ কর্মীদের ভিসা দেয়া বাড়িয়েছে জার্মানি

কিন্তু বিভিন্ন সংস্থা এবং তাদের পরিচালিত গবেষণায় বারবার দেখা গেছে, জার্মানি আসার ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মীদের নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়৷ সম্প্রতি অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) জানিয়েছে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, ভিসা প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতার কারণে নানা সংকটে পড়ছেন অভিবাসী কর্মীরা৷ এর সঙ্গে সংস্থাটি আরো উল্লেখ করেছে, জার্মানিতে বাসস্থানের অভাব এবং শিশুদের যত্নআত্তির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা এবং সমাজে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে বাধার কারণে অনেক বিদেশি কর্মী আগ্রহ হারাচ্ছেন৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দক্ষ কর্মীদের আকৃষ্ট করতে অভিবাসন আইনের কিছু ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা এই বছরের মার্চে কার্যকর হয়েছে৷ চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ৮০ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থান ভিসা ইস্যু করেছে জার্মানি৷

সমীক্ষাটি বলছে, অভিবাসনের সুযোগ তৈরি করা না হলে ২০৪০ নাগাদ জার্মানির ১৬টি কেন্দ্রীয় রাজ্যের মধ্যে কয়েকটির অবস্থা খুবই শোচনীয় হতে পারে৷ পূর্ব জার্মান রাজ্য টুরিংগিয়া এবং জারলান্ডে শ্রমশক্তি ১০ শতাংশের বেশি কমবে৷ আর হামবুর্গ, বার্লিনে ও ব্রান্ডেনবুর্গের শ্রমবাজারেও পড়বে বিরূপ প্রভাব৷

সমীক্ষায় আরো বলা হয়েছে, বাডেন-ভ্যুর্টেমবের্গ, বাভারিয়া, হেসে, বার্লিন এবং হামবুর্গ রাজ্যে বিপুল সংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন দেখা দেবে৷

অনাবিষ্কৃত সম্ভাবনা

অন্য একটি সমীক্ষা বলছে, জার্মানিতে অবস্থানরত অভিবাসীদের শ্রমবাজারে যুক্ত করার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত৷ এ বছরের শুরুতে জার্মানির ফেডারেল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন রিসার্চ (বিআইবি) এর করা সমীক্ষাতে দেখা গেছে, জার্মান শ্রমবাজারে বিদেশি বংশোদ্ভূত মানুষের প্রতিনিধিত্ব খুবই কম৷

বিআইবি জানিয়েছে, জার্মানিতে থাকা অভিবাসী বা অভিবাসনের ইতিহাস রয়েছে এমন মানুষদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো উচিত৷ এসব মানুষকে সমাজে এবং শ্রমবাজারে অন্তর্ভুক্ত করতে জার্মানির উচিত ভাষা শেখানো ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার সুযোগ করে দেয়া৷

ফেডারেল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন রিসার্চ বলছে, জার্মানিতে অভিবাসনের অতীত ইতিহাস রয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা দুই কোটি ৪০ লাখ৷ আর দেশটির মোট জনসংখ্যা আট কোটি ৫০ লাখ৷ অর্থাৎ প্রতি চার জনে অন্তত একজন মানুষের অভিবাসনের অতীত রয়েছে৷

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com