পর্যটন, কৃষি শিল্পের মতো কর্মী সংকটে থাকা খাতগুলোর চাহিদা মেটাতে বিদ্যমান অভিবাসন আইন সংস্কার করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের দেশ স্পেন। এর ফলে চাকরিদাতারা সহজে বিদেশ থেকে কর্মী আনার অনুমতি পাবে। পাশাপাশি স্পেনে এখন বসবাস করছেন এমন অভিবাসীদের নিয়োগ দিতে আলাদা করে আর কাজের অনুমতির প্রয়োজন হবে না।
দেশটির অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের মতে, আগের প্রক্রিয়াটি ধীর আর প্রয়োজনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ায় স্পেন সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। মন্ত্রীসভার বৈঠকে বিলটি পাসের পর দেশটির সামাজিক নিরাপত্তা ও অভিবাসনমন্ত্রী হোসে লুইস এসক্রিভা সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এই উদ্যোগের ফলে অভিবাসনের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্চগুলো আমরা ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারবো।”
সহজে মিলবে কাজের অনুমতি
নতুন নিয়ম অনুযায়ী দুই বছর বা তার বেশি সময় ধরে দেশটিতে বসবাসরত বিদেশিরা এখন সাময়িক বসবাসের।
অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। এজন্য শর্ত হিসেবে কর্মী সংকট থাকা খাত সংশ্লিষ্ট কোনো প্রশিক্ষণে নিবন্ধন করতে হবে। এছাড়া যারা ছয়মাস ধরে কাগজবিহীনভাবে কাজ করেছেন, তারা প্রমাণ সাপেক্ষে বৈধভাবে কাজের অনুমতির আবেদন করতে পারবেন। সরকারের হিসাবে স্পেনে পাঁচ লাখ মানুষ আছেন, যারা এখন অনানুষ্ঠানিকভাবে কাজে নিযুক্ত আছেন।
বিদেশি শিক্ষার্থীরা দেশটিতে পড়াশোনা শেষ করার সাথে সাথেই কাজে যোগ দিতে পারবেন। আগের নিয়ম অনুযায়ী, তাদের তিন বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। এছাড়া পড়াশোনারত অবস্থায় তারা সপ্তাহে ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজের অনুমতি পাবেন।
আইনটির কারণে কর্মী সংকট থাকা খাতগুলোর জন্য বিদেশিদের কাজ ও ভিসা পাওয়ার উপায়ও সহজ হবে।
এসক্রিভা জানিয়েছেন, যেসব খাতে কর্মী চাহিদা রয়েছে তার একটি হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করবে তার মন্ত্রণালয়। এতে শ্রমবাজার সম্পর্কে পরিস্কার চিত্র পাওয়া যাবে।
বেকারত্বের উচ্চহার সত্ত্বেও কর্মী সংকট
বর্তমানে স্পেনে বেকারত্বের হার ১৩ দশমিক ছয়-পাঁচ শতাংশ, যা ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম । তবে চাকরিদাতাদের তথ্য অনুযায়ী, পর্যটন, কৃষি, নির্মাণ ও পণ্য পরিবহণ খাতে কর্মী সংকটে ভুগছেন তারা। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের কাজের অনুমতি সত্ত্বেও চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।
কিছু নির্দিষ্ট খাতে কর্মী চাহিদা পূরণে মরক্কো, ইকুয়েডর ও কলম্বিয়ার সঙ্গে অভিবাসন কর্মসূচী রয়েছে দেশটির।
মরক্কো থেকে সমুদ্র পেরিয়ে প্রতি বছর কয়েক হাজার মানুষ স্পেনে আসার চেষ্টা করেন। তাদের অনেকেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে অনানুষ্ঠানিক শ্রমখাতে কাজে নিযুক্ত হন। নতুন আইনের ফলে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে আশা করছে দেশটির সরকার। সাংবাদিক সম্মেলনে এসক্রেবা বলেন, ‘নিয়মসঙ্গত, সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ অভিবাসনকে উৎসাহিত করাই’ আইন সংস্কারের উদ্দেশ্য।