1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফেরত পাঠাতে চায় ইইউ
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৮:৫৫ অপরাহ্ন

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফেরত পাঠাতে চায় ইইউ

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩

আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে যাদের আশ্রয় আবেদন বাতিল হয়েছে, তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে তাগিদ দেয় ইউরোপীয় কমিশন৷

চলতি মাসের শুরুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিবাসন বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন৷ তখন তারা জানিয়েছিলেন, যেসব আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন বাতিল হয়েছে, তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানোর মাধ্যমে বার্তমান পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা জরুরি৷

সংস্থাটির হোম অ্যাফেয়ার্স কমিশনার ইলভা ইয়োহাসনের দেওয়া তথ্যমতে, আশ্রয়ের যোগ্য নয় এমন অভিবাসীদের মাত্র ২১ ভাগকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷

তিনি বলেন, ‘‘আশ্রয় আবেদনের অধিকারকে সুরক্ষিত করতে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যারা আশ্রয়ের যোগ্য নন, তাদের বেলায় যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷ আমাদের অভিবাসন দরকার৷ তবে তা হবে আইনি প্রক্রিয়ায়৷

ফিরতে হবে সাড়ে তিন লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে

ইউরোপীয় কমিশনের সবশেষ পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে তিন লাখ ৪০ হাজার বিদেশিকে নিজ নিজ দেশে ফেরত যেতে বলা হয়েছে৷ তবে নানা কারণে তাদের অনেকেই ফেরত যায়নি বলে জানা গেছে৷

অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বলেছে, এভাবে দেশে ফেরত যাওয়ার বিষয়টি নানাভাবে হয়ে থাকে৷ এটি সম্ভবত স্বপ্রণোদিত একটি উদ্যোগ, যা রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ ছাড়া অভিবাসী নিজেই করে থাকেন৷ অথবা রাষ্ট্র নিজেই এর আয়োজন করে৷

এ ধরনের প্রত্যাবাসনে কাউন্সেলিং বেশ জরুরি বলে মনে করে সংস্থাটি৷ কারণ তারা চান, একজন অভিবাসনপ্রত্যাশী যেন নিজে বুঝে শুনে সিদ্ধান্তটি নিতে পারেন৷

দেশে ফিরে খুশি অনেকে

সাত বছর জার্মানি থাকার পর নিজ দেশ গাম্বিয়া ফেরত গেছেন মুসা কোকার৷ আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার (আইওএম) সহায়তায় দেশে ফেরত যান তিনি৷ সংস্থাটিকে দেওয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে মুসা জানান, দেশে ফেরত আসার পেছনে একটি কারণ হলো তার মা-বাবাকে দেখাশোনা করা৷

নিজ দেশে এখন ট্যাক্সি চালকের কাজ করেন মুসা৷ সেইসঙ্গে কিছু গৃহপালিত পশু রয়েছে তার৷ জার্মানিতে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি৷ আর নিজ দেশে ফিরে সেই জ্ঞানকেই কাজে লাগাচ্ছেন মুসা৷

তিনি বলেন, ‘‘আমি বলব না যে, আমার এখন (দেশে ফেরত আসার পর) সবকিছুই আছে৷ কিন্তু আমি সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দেই যে, আমি শান্তিতে আছি৷ কোনো চাপ নেই৷ আর আমি আমার পরিবারের সঙ্গে এখন শান্তিতে থাকতে পারছি৷ ’’

অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইওএম এক জরিপে জানিয়েছে, দেশে ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের ৮০ ভাগ মানুষ নতুন জীবন শুরু করতে যে সহযোগিতা পেয়েছেন, তা নিয়ে তারা সন্তুষ্ট৷

স্বেচ্ছা-প্রত্যাবাসনের সমালোচনা

এদিকে প্রত্যাবাসন ও নতুন করে জীবন শুরু করার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে নীতিমালা সে বিষয়ে সতর্ক করছে অধিকার সংস্থাগুলো৷ তাদের দাবি, স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের জন্য এবং প্রত্যাবাসনের পর সেই সমাজে নিজেকে একীভূত করতে যে সহায়তা দেওয়া হয়, তা আসলে প্রত্যাবাসনের মোড়কে দেওয়া মানবিক সহযোগিতার মতো৷ সমালোচনা এড়াতে এটি করা হয়ে থাকে৷

অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা প্রো অ্যাজাইল নামের একটি সংস্থা জানিয়েছে, ইরাকের এক নারী ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন৷ তার বাবা স্বেচ্ছায় ফিনল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে যাওয়ার পর গুলিতে নিহত হন৷ নিজ দেশে নির্যাতনের মুখে পড়ার আশঙ্কা থাকলেও তার আশ্রয় আবেদন বাতিল করা হয়েছিল৷ প্রত্যাবাসনের অপেক্ষা না করে তিনি তখন স্বেচ্ছায় দেশে ফেরত চলে গিয়েছিলেন৷ এর একমাস পর নিহত হন তিনি৷   

এমন প্রেক্ষিতে জার্মানির প্রত্যাবাসন এবং সমাজে একীভূত হওয়ার এই নীতির সমালোচনা করেছে রিটার্ন ওয়াচ নামে একটি সংস্থা৷ তাদের দাবি, এই নীতির মাধ্যমে যত বেশি সম্ভব অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠাতে চায় জার্মানি৷ যত দ্রুত সম্ভব এবং যত কম খরচে, কম ঝামেলায় অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠাতে চান তারা৷ কারণ এটি এমন একটি প্রক্রিয়া, যা সাধারণ মানুষ সহজে গ্রহণ করে থাকে বলে দাবি সংস্থাটির৷

সংস্থাটির প্রশ্ন, দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া একজন মানুষ এভাবে ফেরত গিয়ে সমাজে কিভাবে একীভূত হতে পারে?

এর পরিপ্রেক্ষিতে মরক্কো, আফগানিস্তান, ইরাক, নাইজেরিয়া এবং মালিতে ফেরত যাওয়া অভিবাসীদের বর্তমান অবস্থার নিয়ে গবেষণা করে সংস্থাটি৷ তাদের দাবি, স্বেচ্ছায় ফেরত যাওয়া আসলে প্রত্যাবাসনের চেয়ে তেমন আলাদা কিছু নয়৷ স্বেচ্ছায় ফেরত যাওয়ার এবং ফিরে গিয়ে আবার জীবন শুরু করার জন্য যে সহযোগিতা করা হয় তা আসলে স্বেচ্ছায় হয় না৷ বরং প্রয়োজনের তাগিদে এবং আর কোনো বিকল্প না থাকায় এই পদ্ধতি হাতে নেওয়া হয়৷

সুরক্ষাই হলো আশ্রয় প্রক্রিয়ার মূল বিষয়, মনে করিয়ে দেয় সংস্থাটি৷ তবে, এর উত্তরে আইওএম জার্মানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্বেচ্ছা ফেরত যাওয়ার বিষয়টি যদি বেশি সংখ্যক অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়, তাহলে তা হবে পুরো প্রক্রিয়াটির সরলীকরণ৷

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com