শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:১৪ অপরাহ্ন
Uncategorized

ক্যালিফোর্নিয়া হত্যাকাণ্ডে আতঙ্কে অভিবাসীরা

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩

প্রায় দুই বছর আগে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি খামারে কাজ করতে আসা জোসে রোমেরোর জন্য অ্যামেরিকা নিরাপদ এক জায়গা হওয়ার কথা ছিল। এমনটা মেক্সিকো ও চীন থেকে আসা অভিবাসীরাও ভেবেছিলেন। সোমবার সান ফ্রান্সিসকোর দক্ষিণে হাফ মুন বেতে এক বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন রোমেরো। প্রাণ হারান অন্য ছয় অভিবাসী শ্রমিক।

যুক্তরাষ্ট্র বন্দুক সহিংসতার সাথে খুব পরিচিত দেশ হলেও ক্যালিফোর্নিয়ার হত্যাকাণ্ডটি ছিল অপ্রত্যাশিত। কারণ, এটা ঘটে লস অ্যাঞ্জেলেসের বাইরে এশিয়ান আমেরিকান ছিটমহল মন্টেরে পার্কের একটি বলরুমে আরেক বন্দুকধারীর গুলি বর্ষণের মাত্র দু’দিন পর।

পরপর দুটি বন্দুক হামলার ঘটনায় মোট ১৮ জন নিহত হয়েছে, যা অভিবাসী কমিউনিটির মাঝে আতঙ্ক তৈরি করেছে। ‘এখানে মানুষ আসে তার জীবনকে উন্নত করতে, অথচ তারা এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে,’ বলেন রোমেরোর চাচাতো ভাই হোসে সুয়ারেজ।

হামলাকারীর একজন হলো ৭২ বছর বয়সি হু ক্যান ট্রান, যিনি মন্টেরে পার্কের ডান্স স্টুডিওতে প্রায়ই যেতেন, আর অন্যজন হচ্ছে ৬৬ বছর বয়সি চুনলি ঝাও হাফ, যিনি মুন বে ফার্মে কাজ করতেন। ঘটনা দু’টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদ বৃদ্ধি ও অভিবাসীদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়ার ভয়ের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ায় ৩২ শতাংশ এশীয় অভিবাসী এবং ২৩ শতাংশ ল্যাটিন অভিবাসী জানিয়েছেন যে, তারা বন্দুক সহিংসতার শিকার হওয়া নিয়ে ভীত ও উদ্বিগ্ন। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিদের চেয়ে ভয়ের এই মাত্রা তিনগুণের বেশি।

আন্তোনিও পেরেজ ১৯৮৩ সালে মেক্সিকো থেকে চলে আসার পরে এখন হাফ মুন বেতে বসবাস করেন। তিনি জানান, তিনি তার মাতৃভূমিতে চোরাচালানকারীদের সহিংসতা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সহিংসতার মধ্যে আটকা পড়েছেন।

‘এখানে এই ধরনের চরম পরিস্থিতি কখনোই আশা করিনি,’ পেরেজ বলেন।

প্রায় ৩৮০ মাইল দক্ষিণে মন্টেরে পার্কে নাচের হলে গুলিবর্ষণের ঘটনা বাসিন্দাদের মাঝেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তাদের ভয় আমেরিকার বন্দুক সংস্কৃতির বিষ এবং গণহত্যার মহামারী এশিয়ান-আমেরিকান সম্প্রদায়কে সংক্রমিত করছে।

৩৬ বছর বয়সী ফ্রাঙ্ক হিও বলেন, আমেরিকানদের কাছে বন্দুক থাকে, সব জায়গায় বন্দুক আছে। এখানে থাকা অনেক বিপজ্জনক। বন্দুকধারীরা তাদের সম্প্রদায়ের লোক বলে অভিবাসীদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বন্দুকধারীরা এশিয়ান, নিহতরাও এশিয়ান, বলেন ফিলিপাইন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো ৭২ বছর বয়সী রোল্যান্ডো ফাভিস।

অনেকেই বলেছেন, তারা বেশ কয়েক বছর ধরে নিরাপত্তা নিয়ে বেশি শঙ্কিত ছিলেন। তারা মনে করেন, করোনা মহামারীর প্রেক্ষাপটে চীনকে দোষারোপ করে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য এশীয়দের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক অপরাধের প্রবণতা বৃদ্ধি করেছে।

মিশিগান ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, মহামারীর পরে এশিয়ান আমেরিকানদের মাঝে বন্দুক কেনার সংখ্যা বেড়েছে। বন্দুক আছে এমন এক তৃতীয়াংশ বলেছে, তারা এশিয়াবিরোধী ঘটনার এলাকায় সব সময় অস্ত্র বহন করে। আরেক তৃতীয়াংশ জানিয়েছেন, তারা তাদের বাড়িতে বন্দুক লোড ও আনলক করে রাখেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com