শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:১৫ অপরাহ্ন
Uncategorized

কানাডায় আরও অভিবাসী প্রয়োজন

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩

আসন্ন বছরগুলোতে অভিবাসন সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে কানাডা। এ সিদ্ধান্তের ফলে নীতি বিশেষজ্ঞরা স্বাস্থ্যসেবা, আবাসন এবং শ্রমবাজারে সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে চিন্তিত। তবে, অভিবাসন মন্ত্রী শন ফ্রেজার জোর দিয়ে বলেছেন যে কানাডায় শ্রম ঘাটতি এবং জনসংখ্যাগত পরিবর্তন যা দেশের ভবিষ্যতকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে, তার জন্য আরও নতুনদের (অভিবাসী) প্রয়োজন।

কানাডিয়ান প্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফ্রেজার বলেছেন, ‘যদি আমরা আমাদের অভিবাসন উচ্চাকাক্সক্ষা বাড়ানো অব্যাহত না রাখি এবং আরও বেশি কর্মজীবী জনসংখ্যা এবং নতুন পরিবারকে এই দেশে নিয়ে না আসি তাহলে এটি আমাদের শ্রমের ঘাটতির প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে না বরং এখন থেকেই আগামী প্রজন্মের জন্য প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে; শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবায় আমাদের সামর্থের বিষয়ে প্রশ্ন হিসেবে দেখা দেবে।’

গত নভেম্বর ২০২২ সালে ফেডারেল লিবারেল সরকার একটি নতুন অভিবাসন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। সে অনুযায়ী কানাডা ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি বছর ৫ লাখ অভিবাসী গ্রহণ করবে। গত বছর রেকর্ড ৪ লাখ ৩১,৬৪৫ জন কানাডার স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছেন। নিউ ব্রান্সউইক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টেড ম্যাকডোনাল্ড বলেন, নতুন অভিবাসন হার একই রকম দেশগুলোর হারের তুলনায় যথেষ্ট বেশি হবে, যেমন অস্ট্রেলিয়া। তিনি বলেন, এটি নিজেই একটি খারাপ বিষয় নয়। কিন্তু তার মতে, বর্তমান শ্রমের ঘাটতি মেটানোর জন্য অভিবাসনের হার বাড়ানো সঠিক উপায় নয়।

ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ‘আমি মনে করি নীতিটি আরও অর্থবহ হবে যদি এটি অন্তর্নিহিত কাঠামোগত শ্রমবাজারের ঘাটতি হিসাবে দেখা যায় যা অব্যাহত থাকে তার সাথে একত্রিত করা হয়।’ একই সাথে, তিনি বলেছেন অভিবাসনের একটি ন্যায্যতা স্পষ্ট, আর সেটি হল কানাডার জন্মহার হ্রাস পাচ্ছে। পরিসংখ্যান কানাডার মতে, ২০২০ সালে দেশটির জন্মহার রেকর্ড সর্বনিম্ন কমেছে। এ বছরে একজন নারী গড়ে ১.৪টি শিশুর জন্ম দিয়েছে। এটি অভিবাসন ছাড়া জনসংখ্যার হার বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ২.১ শতাংশের কম।

তবে এসব হিসেব আরও নতুনদের আগমনের সাথে সাথে অন্যান্য চলমান সমস্যা যেমন : আবাসনের সামর্থ্য এবং স্বাস্থ্য যত্নের উপর কি ধরনের চাপ সৃষ্টি করতে পারে, সে বিষয়ে অন্যদের উদ্বিগ্ন হওয়া থেকে বিরত রাখে না। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কানাডার প্রাক্তন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু গ্রিফিথ বলেছেন, ‘আবাসনের ক্রয়ক্ষমতা এবং প্রাপ্যতার উপর এই বিষয়গুলোর প্রভাব সম্পর্কে আমি দেখেছি তেমন কোনও মূল্যায়ন নেই। স্বাস্থ্যসেবার উপর অতিরিক্ত চাপের ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলোর কোনও মূল্যায়ন নেই।’

তবে ফ্রেজার বলেন, নতুন স্থায়ী বাসিন্দাদের অনেকেই ইতিমধ্যেই কানাডায় বসবাস করছেন। উদাহরণস্বরূপ, ১ লাখ ৫৭,০০০ আন্তর্জাতিক ছাত্র ২০২১ সালে স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছেন। ‘এটা এমন নয় যে কানাডায় অর্ধ লক্ষ লোক আসছে যারা ইতিমধ্যে এখানে নেই,’ মন্ত্রী মন্তব্য করেন। বরং যারা ইতিমধ্যেই রয়েছেন তারাই স্থায়ী হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, বসন্তে এক্সপ্রেস এন্ট্রি সিস্টেমেও পরিবর্তন আসছে, যাতে অভিবাসীরা কানাডায় যে সেক্টর এবং অঞ্চলে যাচ্ছেন তার ভিত্তিতে নির্বাচন করা যেতে পারে। এটি স্বাস্থ্যসেবা এবং আবাসনের মতো বিষয়গুলোর কিছু চাপ কমাতে সাহায্য করবে।

সরকারের নতুন লক্ষ্যগুলো খুব উচ্চাভিলাষী কিনা তা নিয়ে চলমান বিতর্কের সাথে যোগ হয়েছে সরকারী নীতিকে প্রভাবিত করছে সে সম্পর্কে উচ্চতর যাচাই-বাছাইয়ের বিষয়টি। রেডিও-কানাডা গত সপ্তাহে রিপোর্ট অনুসারে ইমিগ্রেশন, রিফিউজিস এবং সিটিজেনশীপ কানাডার দুটি সূত্র জানিয়েছে যে সা¤প্রতিক বছরগুলোতে অভিবাসন নীতিতে ম্যাককিনসে অ্যান্ড কোম্পানির প্রভাব বেড়েছে। তবে গত বৃহস্পতিবার, ১২ই জানুযারি এক সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী ফ্রেজার বলেন, নতুন অভিবাসন স্তরের পরিকল্পনায় ম্যাককিন্সির কোনো ভূমিকা নেই।

কানাডার ব্যবসায়িক গোষ্ঠীগুলো চলমান শ্রম ঘাটতিকে একটি প্রধান উদ্বেগ হিসাবে দেখছে এবং তারা শূন্যপদ পূরণে সহায়তা করার জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে। নতুন পরিকল্পনার ঘোষণার পর কানাডার বিজনেস কাউন্সিল একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের পরিকল্পনাকে সাধুবাদ জানিয়ে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com