বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৩:১৬ অপরাহ্ন
Uncategorized

সমুদ্রের মতো লেক

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২১

ইভেন্ট ক্যাপিটাল অব নিউজিল্যান্ড’ বলা হয় তাওপো শহরকে। এই শহরটা গড়ে উঠেছে পুরো একটা লেককে কেন্দ্র করে। লেকটাকে বৃত্ত করে রেখেছে শহরটা। আর শহরকে বৃত্ত করে রেখেছে ছোটবড় অনেকগুলো পাহাড়। দূরের কোনো উপগ্রহ থেকে ছবি তুললে হয়তো বিশাল কোনো স্টেডিয়ামই মনে হবে।

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী পার্থের একটি শহরতলী হ্যামিল্টন। বছরের বেশিরভাগ সময়ই সেখানকার মানুষে ভরে থাকে পুরো শহর। নিজে গাড়ি চালিয়ে গেলে দুই ঘণ্টারও কম সময় লাগে। শহরে ঢোকার আগে যে কেউ লেকটার পাড়ে গিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়ায়। দিগন্তহীন জলরাশি। হঠাৎ করে দেখলে মনে হবে, ওটা কোনো লেক নয়, বিস্তৃত প্রশান্ত মহাসাগরের একটা অংশ। কোনো উঁচু ঢেউয়ের বাহার না থাকলেও জোয়ারের সময় মাঝারি ঢেউ ছলাৎ ছলাৎ শব্দ করে আছড়ে পড়ে। নীলজলের লেকে নিজের চেহারাটা পর্যন্ত স্পষ্ট পড়া যায়।

গ্রীষ্মকালে খুব সকালেই লেকের জলে গা ভেজাতে মানুষজন দলবল নিয়ে নেমে যায়। কেউ কেউ ওয়াটার ভলিবল খেলে। ছোট্ট ছোট্ট কেনোই বা নৌকা বাওয়ার দৃশ্য তো চোখে পড়বেই। অনেকে ভট ভট শব্দ তুলে ওয়াটার বাইক চালায়, তাদের বেশির ভাগই পর্যটক। মাথার উপর হেলিকপ্টার বা জেটপ্লেন উড়ছে। লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য পর্যটকদের ভাড়া করা ওসব হেলিকপ্টার বা জেটপ্লেন। ক্রীড়াবিদেরও দেখা মেলে। প্রতি গ্রীষ্মে এই লেককে কেন্দ্র করে খেলাধুলা হয় বলেই কিন্তু এর নামম ‘ইভেন্ট ক্যাপিটাল অব নিউজিল্যান্ড’।

তাওপো লেক

তাওপো লেক

শুধু নিউজিল্যান্ডই নয়, মূলত অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় লেক তাওপো। লেকের আয়তন প্রায় ৬১৬ বর্গকিলোমিটার- যা ইউরোপের কোনো একটা ছোট দেশের চেয়ে আয়তনে বড়। লেকটার গভীরতাও অনেক। প্রায় ১৯০ মিটার গভীর—যা কি-না অনেক সমুদ্রের গভীরতার সমান!

তাওপো লেক নিয়ে মাউরি মিথ রয়েছে, যা সেখানকার বেশিরভাগ মানুষই বিশ্বাস করেন। মাউরিদের নাটাইরাঙ্গি ট্রাইবের উপ ট্রাইব টোউফারি টোয়ার লোকজন বিশ্বাস করে, তাদের দেবতা নাটাইরাঙ্গি জলের অভাব দূর করার জন্য টাউফিরি পর্বতে দাঁড়িয়ে আকাশ সমান বিশাল একটা গাছকে মূলসহ তুলে ফেলেছিলেন বলে সেই গর্তের স্থানে বৃষ্টির দেবতা পানি জমিয়ে লেকটার সৃষ্টি করেন। তবে ভূতত্ত্ববিদদের মতে, ১২৫ খ্রিস্টাব্দে একটা বিশাল আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের কারণে লেকটার সৃষ্টি হয়েছিল।

নিউজিল্যান্ডের তাওপোর আগ্নেয়গিরির নিচে কোটি কোটি ডলার মূল্যের সোনা ও রূপা রয়েছে বলে দাবি গবেষকদের৷ গবেষকরা জানিয়েছেন, সেখান থেকে বছরে ২.১৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সোনা ও ৩.৬ মিলিয়ন ডলার মূল্যের রূপা উত্তোলন করা যাবে। সেই সঙ্গে অন্য মূল্যবান ধাতব পদার্থও পাওয়া যাবে৷

যাহোক, অনেকেই এই লেকের পুরো নাম জানেন না। লেকটার পুরো নাম- “লেক তাওপো অটি টোয়া”। প্রায় ৪০টার মতো ছোট-বড় নদী এবং ঝরনা এই লেকে এসে পড়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র একটা নদী হোকা জলপ্রপাত ধরে বের হয়ে গেছে। নদীটির নাম- ওয়াইকাটো। এই নদী হোকা জলপ্রপাত দিয়ে বের হয়ে, সেই অকল্যান্ডের কাছাকাছি ওয়াইকাটো পোর্ট ধরে তাসমান সমুদ্রে গিয়ে পড়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com