শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫১ অপরাহ্ন
Uncategorized

বাংলাদেশ থেকে এবারও হজে যাওয়া অনিশ্চিত

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২১

বাংলাদেশ থেকে এবারও সৌদি আরবে গিয়ে হজ পালন করা সম্ভব হবে কি না, সেই দুশ্চিন্তা বাড়ছে। হজ শুরু হওয়ার অন্তত পাঁচ মাস আগে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রার সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত হতে থাকে। এ বছর হজের সময় বাকি আছে আর মাত্র তিন মাস, কিন্তু এখনো সৌদি আরব থেকে হজের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত পায়নি সরকার। বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়া যাবে কি যাবে না—এমন দোদুল্যমান অবস্থানে থেকে কাজ করছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে সৌদি আরব থেকে কোনো বার্তা না পাওয়া পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেওয়ার সুযোগ নেই মন্ত্রণালয়ের।

গত বছর অভ্যন্তরীণভাবে সীমিত পরিসরে হজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে গত বছর এক লাখ ৩৭ হাজার হজযাত্রী যাওয়ার কথা থাকলেও কেউ যেতে পারেননি। হিজরি সালের জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বব্যাপী  ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় মিলনমেলা করোনাভাইরাসের কারণে গতবার আন্তর্জাতিকভাবে বন্ধ ছিল। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে এবারও বন্ধ থাকার আশঙ্কা রয়েছে। অন্তত বাংলাদেশের মুসল্লিদের জন্য হজ করা সম্ভব হবে না বলেই মনে করছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো। তবে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার সময় হয়নি বলে মনে করছে তারা। কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থা নেতিবাচক খবরই দিচ্ছে। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে বাংলাদেশ থেকে যাত্রী প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বহির্বিশ্বে ভারতের করোনা সংক্রমণের মারাত্মক পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলাদেশকেও সমানভাবে বিবেচনা করা হয়। ওমানে ভারতের নাগরিকদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশ-ভারত ভ্রমণকারীদেরও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রেখেছে ওমান।

সৌদি আরবে হজযাত্রী যাওয়ার সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। হজ বিষয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে যোগাযোগ বাংলাদেশ সব সময়ই গুরুত্ব দিয়ে করে থাকে। সৌদি আরবও বাংলাদেশকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর হলেও সরকারি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আগামী ২১ জুলাই ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হতে পারে। আর হজ শুরু হতে পারে ১৯ জুলাই। সেই হিসাবে গত মার্চ মাসেই হজ গমনেচ্ছুদের যাত্রার বিমান শিডিউল ঠিক হওয়ার কথা। কিন্তু অনিশ্চয়তা থাকায় হজসংক্রান্ত অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করলেও চূড়ান্ত পর্বের কাজে হাত দেয়নি ধর্ম মন্ত্রণালয়।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সৌদি আরব থেকে হজ বিষয়ে ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোনো বার্তাই আমরা পাইনি। তাই হজ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারছি না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকারের কার্যক্রম বিষয়ে অগ্রিম অনেক কিছু বলা যায়, কিন্তু সৌদি আরবের সর্বোচ্চ জায়গা থেকে সিদ্ধান্ত আসার আগ পর্যন্ত কোনো পর্যায় থেকে সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু বলা হয় না।’

প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে অবস্থা অনেকটা নেতিবাচক, এটা যে কেউ বিশ্লেষণ করলেই বলতে পারেন। না হলে এত দিনে হজের সব কিছু চূড়ান্ত হয়ে যেত। কিন্তু আমি সরকারের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে সেটা বলতে পারি না। কারণ সম্ভাবনা একবারে শেষ হয়ে যায়নি।’

নিশ্চিত কোনো বার্তা না থাকায় অপেক্ষার প্রহর গুনছে বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলো। বাংলাদেশের হজযাত্রীদের ৯০ শতাংশের বেশি যান বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোর ব্যবস্থাপনায়। হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে কোনো হজযাত্রী নেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে সৌদি আরব এখনো কিছু জানায়নি। আমরা আশা করছি পরিস্থিতি অনুযায়ী সীমিত পরিসরে হজ অনুষ্ঠিত হলে বাংলাদেশ থেকেও হজে যাওয়ার সুযোগ হবে। তবে তার পুরোটাই নির্ভর করছে সৌদি আরবের ওপর।’

এদিকে করোনার প্রথম ঢেউ সামলে কিছুটা ভালো অবস্থানে আসায় মার্চ মাসের মাঝামাঝি নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে হজে যেতে ইচ্ছুকদের করোনার দু্ই ডোজ টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। তখন সৌদি আরব থেকেও সীমিতসংখ্যক হজযাত্রী নেওয়ার ইঙ্গিত মিলেছিল। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সব কিছুকে দ্রুত পাল্টে দিয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com