বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০২:২৭ অপরাহ্ন
Uncategorized

নেপালের দর্শনীয় স্থানগুলো

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২১

চিতবন রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জ(Chitwan National Park)হচ্ছে নেপালের প্রথম জাতীয় উদ্যান। এটির আগের নাম ” রাজকীয় চিতবন রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জ” এবং এটি ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়াও এটিকে ১৯৮৪ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এটি ৯৩২ বর্গকিমি (৩৬০ বর্গমাইল) এলাকা নিয়ে গঠিত এবং উপ-উষ্ণমণ্ডলীয় তরাই উপত্যকা এবং দক্ষিণের চিতবন জেলায় অবস্থিত। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠের নদী উপত্যকার ১০০ মি (৩৩০ ফু) থেকে সিবালিক পাহাড়ের ৮১৫ মি (২,৬৭৪ ফু) উচ্চতার মধ্যে অবস্থিত। চিতবন রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জে প্রায় ৭০০ প্রজাতির অধিক বন্যপ্রাণী ও গাছপালা দিয়ে বিস্তৃত। এ ছাড়া প্রজাপতি, মথ ও পোকা প্রজাতির সংখ্যা নির্ণীত হয়নি। এ ছাড়া শঙ্খচূড় এবং শিলা পাইথনসহ সাপের অন্যান্য ১৭ প্রজাতি, কচ্ছপ এবং গুই সাপ আছে। ১৯৫০-এর দশকের প্রথম দিকে, নারায়ণী নদীতে ২৩৫টি ঘড়িয়াল ছিল। প্রতি বছর ঘড়িয়ালের ডিম সংগ্রহ করা হয় নদী থেকে, ঘড়িয়াল সংরক্ষণ প্রকল্পে ছানাগুলোকে ৬-৯ বছরের বড় করা হয়। প্রতিবছর তরুণ ঘড়িয়ালগুলোকে নারায়ণী-রাপ্তি নদী প্রক্রিয়ার মধ্যে পুনর্বাসন করা হয়, যেগুলোর দুঃখিতভাবে শুধুমাত্র খুব কম সংখ্যক বাঁচতে পারে।

সগরমাথা রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জ

সগরমাথা রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জ বা সগরমাথা জাতীয় উদ্যান নেপালের হিমালয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি উদ্যান। বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট এভারেস্ট এই উদ্যানে অবস্থিত। সাগরমাথা জাতীয় উদ্যান ১,১৪৮ বর্গ কিলোমিটার (৪৪৩ বর্গ মাইল) এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। নেপালের সলুখুম্বু জেলার অধীন এই উদ্যান। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা এই উদ্যানে ২,৮৪৫ মিটার থেকে ৮,৮৪৮ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এই উদ্যানের উত্তরে তিব্বত এবং দক্ষিণে দুধকোশী নদী অবস্থিত। উদ্যানটির পূর্বপ্রান্তে রয়েছে মাকালু বরুন জাতীয় উদ্যান।সাগারমাথা নেপালি শব্দ, যার উদ্ভব হয়েছে নেপালি শব্দদ্বয় সাগর (অর্থ “আকাশ”) এবং মাথা (অর্থ “মাথা”) থেকে। বার্ডলাইফ ইন্টারন্যাশনাল এই উদ্যানটিকে পাখি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অভয়ারণ্য হিসেবে চিহ্ণিত করেছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এই উদ্যানটি বৃহত্তর হিমালয়ান অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল।

পবিত্র লুম্বিনি

নেপালের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থানের ৫ম স্থানে আছে লুম্বিনি (Lumbini)। নেপালের তীর্থ যাত্রীদের কাছে এই লুম্বিনি খুবই জনপ্রিয় একটি স্থান। কারণ, ধারণা করা হয়, এটাই সম্ভবত গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান। এর অবস্থান নেপালের দক্ষিণপশিমাঞ্চলের একটি ছোট্ট শহরে। প্রত্নতাত্ত্বিক ভাবে এর বেশ গুরুত্ব রয়েছে কেননা এটি ৫৫০ খ্রিস্টপূর্বের নিদর্শনও বহন করছে। কথিত আছে গৌতম বুদ্ধের মা, মায়া দেবী, এখানে বাগানের একটি গাছের কাছে তার জন্ম দিয়েছিলেন। সেখানে ছোট একটি পার্কের মাঝে মায়া দেবীর নামানুসারে ‘মায়া দেবী মন্দির‘ নামে একটি মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। সারা বিশ্ব থেকে বৌদ্ধ তীর্থযাত্রীদের এই তীর্থস্থান ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান (World Heritage Site) হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

ভক্তপুর

নেপালের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থানের ৩য় স্থানে আছে ভক্তপুর (Bhaktapur)। এর অবস্থান রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে। নেপালের প্রাচীন রাজধানীটি ছিল প্রাচীন রাজ-রাজাদের আবাসস্থল। শহরটির বুদগাঁও ও খৌপা নামে আরো দুইটি নাম রয়েছে। শহরটি মধ্যযুগীয় শিল্প-সাহিত্য, কাঠের কারুকাজ, ধাতুর তৈরি মূর্তি ও আসবাবপত্রের জন্য বিখ্যাত। এখানে দেখা যায় বৌদ্ধ ও হিন্দু মন্দিরের অপূর্ব সমন্বয়। তবে ভক্তপুরের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান হল দরবার স্কয়ার (Durbar Square)। এখানে রয়েছে প্রাচীন অনেকগুলো রাজপ্রাসাদ ছাড়াও বেশ কয়েকটি হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দির। ভক্তপুরের উল্লেখযোগ্য আরো কিছু দর্শনীয় স্থান হল পটার্স স্কয়ার, ভৈরবনাথ মন্দির, ভৈরব মূর্তি, রাজা ভূপতিন্দ্র মাল্লার কলাম, ভত্সলা দুর্গা মন্দির, ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারি, সিদ্ধি লক্ষ্মী মন্দির, ফাসিদেগা মন্দির, দত্তনারায়ণ মন্দির, ভীমসেন মন্দির ইত্যাদি। পুরো শহরটিই ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান (World Heritage Site) হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

অন্নপূর্ণা পর্বত

নেপালের ২য় সেরা দর্শনীয় স্থান হল অন্নপূর্ণা (Annapurna)। এই অন্নপূর্ণা হল অনেকগুলো পর্বতের সমষ্টি। এটি পোখরার পশ্চিমে অবস্থিত। হিমালয়ের পশ্চিমাংশের কয়েকটি চূড়ার সারি এখানে অবস্থিত। অন্নপূর্ণার সবচাইতে উঁচু চূড়াটির উচ্চতা প্রায় ৮০০০ মিটার। এই অঞ্চলের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান হল অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ট্র্যাক। যারা ট্র্যাক করে তাদের জীবনে একবার হলেও এখানে যাওয়া উচিত। আর তাই পেশাদার পর্বতারোহীদের জন্য এটি নেপালের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্র্যাকিং স্পট। বছরের যে কোন সময় এখানে ট্র্যাক করা গেলেও অতিরিক্ত বরফের কারণে মাঝে মাঝে শীতকালে ট্র্যাক বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে এখানে ট্র্যাকিং-এর উপযুক্ত সময় হচ্ছে বসন্তকাল। অন্নপূর্ণা পর্বতসারির ট্রেকিং রাউটগুলোর মধ্যে অন্যতম হল অন্নপূর্ণা সেঞ্চুয়ারি ট্রেক, অন্নপূর্ণা বেইসক্যাম্প ট্রেক এবং অন্নপূর্ণা সার্কিট ট্র্যাক। ১৯৮৬ সালে একে নেপালের একটি প্রাকৃতিক সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

নাগরকোট

নেপালের জনপ্রিয় আরেকটি পর্যটন স্থান হচ্ছে এই নাগরকোট। এটি কাঠমান্ডু থেকে ৩২ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এখানকার হিমালয়ের সর্বোচ্চ শিখরের নাম প্যানরোমা। হিমালয়ের আরো কিছু চূড়া যেমন- মানাস্লু, গণেশ হিমেল, লেঙ্গান, চোবা ভাম্রি গৌরীশঙ্কর নাগরকোট থেকে স্পষ্ট ভাবে দেখা যায়।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com